স্বামীর দেওয়া আগুনে প্রাণ গেল স্ত্রী-শ্যালকের
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দাম্পত্য কলহের জেরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার পাঁচ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন স্ত্রী শারমিন আক্তার ও শ্যালক রুবেল হোসেন।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। এছাড়া দগ্ধ আহত শিরিন আক্তারের অবস্থাও সংকটাপন্ন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শারমিন আক্তারের স্বামী হাসান আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে, শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার গওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ধামরাইয়ের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর সঙ্গে সাটুরিয়া উপজেলার গওলা গ্রামের মৃত আতোয়ার হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। এ দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক বছর ধরে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ‘দাম্পত্য কলহ’ দেখা দেয়। এ নিয়ে হাসান তার স্ত্রী শারমিনকে মারধরও করতেন।
এই দাম্পত্য কলহের জেরে গত সোমবার অভিমান করে ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন শারমিন। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে হাসানও শ্বশুরবাড়ি যান। সেখানেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শারমিন পাশের চাচার বাড়িতে যান। সকাল ১০টার দিকে হাসান চাচা শ্বশুরের ঘরে গিয়ে শারমিনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় চাচি শিরিন আক্তার ও শারমিনের চাচাতো ভাই রুবেল তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের শরীরেও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন হাসান।
এতে শারমিন, তার চাচি শিরিন ও চাচাতো ভাই রুবেল দগ্ধ হন। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে শিরিন ও রুবেলকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এদিকে শারমিনকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারমিন ও রুবেল মারা যান।
সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনার পর আসামি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।