ঢাকা   শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

বাংলাদেশের কাছে আদানি পাওয়ারের পাওনা ৮০ কোটি ডলার

প্রকাশিত: ০৮:১১, ২৪ আগস্ট ২০২৪

বাংলাদেশের কাছে আদানি পাওয়ারের পাওনা ৮০ কোটি ডলার

বাংলাদেশের কাছে আদানি পাওয়ারের পাওনা ৮০ কোটি ডলার

বাংলাদেশের কাছে ৮০০ মিলিয়ন তথা ৮০ কোটি ডলার পায় ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি। গোষ্ঠীটির বিদ্যুৎ উৎপাদক কোম্পানি আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত আদানির কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ পাঠায়, সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই অর্থ পায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্লুমবার্গ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, টাকা না দিলে তারা (আদানি পাওয়ার) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ সরবরাহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, আদানি গ্রুপের এখন পর্যন্ত সরবরাহ লাইন বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে বাংলাদেশ বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করলে প্রতিষ্ঠানটি ঋণদাতা এবং কয়লা সরবরাহকারীদের চাপে পড়বে।

এ সমস্যা সমাধানে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।

বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আদানি গ্রুপের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি

অর্থ পরিশোধে এই বিলম্বের ফলে আদানি গ্রুপ যে আর্থিক ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। কারণ আদানি গ্রুপ এখন বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ যেমন- শ্রীলংকা, ভুটান ও নেপালসহ সারাবিশ্বে নিজেদের প্রসারিত করছে।

২০২২ সালে গৌতম আদানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে গোড্ডায় বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হওয়া এবং বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ রূপকল্পের প্রশংসা করে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। গত বছরের এপ্রিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে।

আদানি পাওয়ার ছাড়াও এনটিপিসি লিমিটেড এবং পিটিসি ইন্ডিয়া লিমিটেডসহ ভারতের কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই সংস্থাগুলোর কাছেও বাংলাদেশের কোনো বকেয়া রয়েছে কি না সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে চলতি মাসের ৫ তারিখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।  

গভর্নর আহসান মনসুর জানান, বাংলাদেশ এখন কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দেশটির সামগ্রিক বকেয়া ২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে বিমান সংস্থাগুলোর বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

অন্যদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদও দ্রুত কমে আসছে। গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে মোট রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে প্রায় তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। 

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচির বাইরেও, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে আরও ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমাদের বার্তাটি পরিষ্কার, আমাদের অর্থের প্রয়োজন। আমরা সব বকেয়া পরিশোধ করতে চাই।